ইসলামপুরঃ কাপড়ের পাইকারি কেনাকাটার দেশের অন্যতম বৃহৎ বাজার | Buy and Sell fabric at wholesale prices

Apparelslearner
By -
0
কাপড়ের পাইকারি কেনাকাটার দেশের অন্যতম বৃহৎ বাজার পুরান ঢাকার ইসলামপুর। থান কাপড়, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজের কাপড়, শার্ট-প্যান্ট, পাজামা-পাঞ্জাবি, বোরকার কাপড়, বিছানার চাদর, পর্দাসহ সব ধরনের পোশাক পণ্যের বিপুল সমারোহ এখানে। এখন দেশীয় গার্মেন্টে কাপড়ের চাহিদার শতভাগ পূরণ হচ্ছে এই ইসলামপুর থেকেই। ব্যবসায়ীরা জানান, এ বাজারে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার কাপড়ের ব্যবসা হয়। তবে রমজানের শুরুর দিকে তা কখনো শত কোটি টাকাতেও পৌঁছায়। এখানকার কাপড় শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও রপ্তানি হয়। মেয়েদের পোশাকের থ্রি-পিস আমেরিকা, সৌদি আরব ও কানাডায় এবং ছেলেদের শার্ট-প্যান্টের কাপড় আমেরিকা, জার্মানি, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি হয়ে থাকে।

জানা যায়, ১৬১০ সালে যখন মুঘল সুবেদার ইসলাম খাঁ ঢাকায় আসেন এর কিছু দিন পরই আহসান মঞ্জিলের পশ্চিমের এলাকাটির নামকরণ হয় ইসলামপুর। তখন ইসলামপুরে বৃহৎ কাপড়ের বাজার না থাকলেও কাপড় সেলাইয়ের কাজকর্ম চলছিল। ১৭৭৩ সালে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা শুরু হয় এখানে।তবে তার আগে ইসলামপুরে বিভিন্ন ফলের ব্যবসাও ছিল, সে জন্য এলাকাটিকে আমপট্টিও বলা হতো। কাপড়ের পাইকারি বাজারে ইসলামপুর অধিক পরিচিত হলেও খুচরা দোকানের সংখ্যাও এখানে অনেক। বিশেষ করে যারা কাপড় কিনে জামা তৈরি করেন তাদের সব সময়ের পছন্দ প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পাইকারি গজ এবং শাড়ি কাপড়ের বিশাল বাজার ইসলামপুর। শুক্রবার এবং বিশেষ দিন ছাড়া প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকারি ও খুচরা ক্রেতায় জমজমাট থাকে এ স্থানটি। দেশে নরসিংদীর বাবুরহাট ও রূপগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়া বৃহৎ কাপড়ের ব্যবসার জন্য পরিচিত হলেও কাপড়ের বৈচিত্র্যতার কারণে দেশজুড়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলামপুর মার্কেটের কদর একটু বেশি।জাপানি টরে, কটন, সেঞ্চুরি, নরমাল টরে, ভয়েল, থ্রিডি, মাইক্রো, গিজা, ইন্ডিয়ান ও থাইল্যান্ডসহ দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের কাপড়ের চাহিদা বেশি থাকে।

এক ব্যবসায়ী জানান, এখানে একটা শার্টের পিস পাইকারি দাম হয় ২০০ টাকা। সেটি পাশেই খুচরা দোকানে হয়ে যায় আড়াইশ টাকা।কিন্তু একই কাপড় এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, হাতিরপুল, ধানমন্ডি কিংবা গুলশান এলাকায় দাম হয় ৫০০ টাকার ওপরে।

সরেজমিন দেখা যায়, এসি মার্কেট, হামিদ ম্যানসন, চায়না মার্কেট, গুলশান আরা সিটি, নবাববাড়ী গেটসহ পুরো এলাকায় পাইকারি ও খুচরা দোকান প্রায় ১০ হাজার। মার্কেটগুলোর বাইরে ছোট-বড় দোকান আছে আরও প্রায় ২ হাজার।ইসলামপুর মূল সড়কের প্রথম ও শেষ ভাগের দুই পাশের মার্কেটগুলোয় রয়েছে শাড়ি-কাপড়। মাঝামাঝি স্থানের মার্কেটে বেচাবিক্রি হয় চাদর, থ্রি-পিস, স্যুটিং কাপড়, ভয়েল পপলিন ও মার্কিন কাপড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসাগুলো এখন মূল সড়ক ছাপিয়ে আশপাশের গলিপথ ও লেনেও স্থান করে নিয়েছে। জিএল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোডসহ নবাববাড়িতে রয়েছে বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট।

ইসলামপুরে পাইকারি কাপড়ের দোকানগুলোর মধ্যে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকাই হলো নবাববাড়ির দোকানগুলো। নবাববাড়ির প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই দুই পাশে চোখে পড়বে বিশাল সব পাইকারি মার্কেট, সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট। চায়না মার্কেট পার হয়ে আরেকটু এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে প্লাজা মার্কেটের।চায়না মার্কেট ছাড়াও নামকরা অন্য মার্কেটগুলো হলো— মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা, কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট ও আবদুল্লাহ মার্কেট। এসব মার্কেটের আটতলা ভবনের প্রত্যেক তলাতেই গজ কাপড়ের বাহারি সব কালেকশন।

ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামসুল আলম সবজল বলেন, আমাদের সমিতিতে সদস্য হিসেবে কাপড় ব্যবসায়ী আছেন ১০ হাজার।এদের মধ্যে ৪ হাজার ভোটার। আগে আমরা প্রতিবছর শুধু ইসলামপুর থেকে সরকারকে হাজার হাজার টাকা কর দিতাম। কিন্তু বন্ডের কাপড়গুলো খোলাবাজারে আসাতে সেটি কমে গেছে। জাপান, কোরিয়া ও ইন্ডিয়া থেকে কাপড় আমদানি করে ইসলামপুরের ব্যবসায়ীরা দেশীয় গার্মেন্টগুলোর শতভাগ চাহিদা পূরণ করে থাকে।

©️ তথ্যসূত্র- বাংলোদেশ প্রতিদিন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আজ এইখানেই শেষ। কোন লেখা কপি করা নিষেধ। প্রয়োজনে শেয়ার করুন।
আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। পোস্টগুলো আরও পাবেন আমাদের ফেইজবুক পেইজে।  পেইজটিতে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন। পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো জানবেন। আরও কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে অথবা ইনবক্সে জানাবেন। 
আমাদের পেইজ লিংকঃ https://www.facebook.com/textileengineeringpathshala

Post a Comment

0Comments

Your are always welcome. Your valuable comments warmly appreciated

Post a Comment (0)